প্যারিসের কফিহাউসে ফ্রয়েডের সঙ্গে কিছুক্ষণ

প্যারিসের কফিহাউসে ফ্রয়েডের সঙ্গে কিছুক্ষণ

প্যারিসের কফিহাউসে ফ্রয়েডের সঙ্গে কিছুক্ষণ

দু’বন্ধু প্যারিসে পৌঁছার পর পছন্দমত হোটেলের খোঁজ খবর নেয়, অবশেষে তারা প্যারিসে ছাত্র হোষ্টেলে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তদের বিশ্রামের প্রয়োজন, তাই তারা রাতের বাকি অংশ ঘুমে কাটাল। পরের দিন দু’বন্ধু শহরের বিভিন্ন নিদর্শন দেখতে বাহিরে বের হলো, ঘুরতে ঘুরতে তারা এক কফিশপে এসে পৌঁছল।

মাইকেলঃ এ কফিশপে এককাপ চা খেতে খেতে বিশ্রামের সময়টা কাটালে কেমন হয়?

রাশেদঃ ভালই হয়, আমারও একটু বিশ্রামের প্রয়োজন।

মাইকেলঃএই কফিশপে বিখ্যাত মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ সিগমুন্ড ফ্রয়েড বসত। তার সম্পর্কে কি তুমি জান?

রাশেদঃ হ্যাঁ, একদিকে যেমন মনোবিজ্ঞানে তার নাম মানসিক বিশ্লেষণ স্কুলের সাথে জড়িত অন্যদিকে তিনি নীতি নৈতিকতার বিধিমালা থেকে সরে আসতে আহবান করেছেন আর অবাধ যৌনতার দিকে ডেকেছেন।

মাইকেলঃ তুমি যে সব সম্পৃক্ততার কথা বলেছ সেগুলোর দিকে না তাকিয়ে তিনি আমাদের কাছে একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী।

রাশেদঃ আমি মনে করি তিনি একজন বিশিষ্ট্য চিন্তাবিদ যিনি আধুনিক পাপাশ্চাত্য সমাজের সভ্যতার ভিত্তি রুপায়ন করেছেন। তার মত ডারউইন, ক্যান্ট, মার্কস, ডরকেইম ও সার্টার এদের সকলেই পাপাশ্চাত্যের চিন্তা ধারার মাঝে ভূমিকম্প সৃষ্টি করেছেন, নব্য পাশ্চাত্যের ধ্যান ধারনামত তারা সমাজ গঠনে ভূমিকা রেখেছেন। আর তাদের মূল ভুমিকাই ছিল ধর্ম, আখলাক-চরিত্র ও কৃষ্টিকালচারকে ধ্বংস করা।

ডারউইনের সৃষ্টি বিবর্তন ও বেড়ে উঠার মতবাদ ছিল জ্বলন্ত মিথ্যাচার যা দুটি বিপজ্জনক ভুয়া চিন্তার জন্ম দিয়েছে। এদু’টোকে পরবর্তীতে চিন্তাগবেষণা নির্ভরেরা তাদের গবেষনাকর্মে কাজে ব্যবহার করেছিল। প্রথম মিথ্যাচারঃ জিনিসের সার্বক্ষনিক ক্রমবর্ধনের ধারণা যা স্থির জিনিসের ধারণাকে বাতিল করে দেয়, এখান থেকে সকল মূল্যবোধ ও চিন্তাধারার আপেক্ষিক হওয়া। দ্বিতীয় মিথ্যাচার হলোঃ মানুষের জৈবিকতা, শুধু তার বস্তুবাদ ও সেসব উপাদান যা তার মধ্যে প্রভাব ফেলে সেগুলোকে আলোচিত করা, পক্ষান্তরে মানুষের আত্মার দিকটাকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা। এমনিভাবে এ কথাও উপেক্ষা করা হয়েছে যে, মানুষ আল্লাহর তৈরী, চাই এটা তার সৃষ্টির ক্ষেত্রে হোক বা তার ক্রমবর্ধনের ক্ষেত্রে হোক।তার প্রথম কাজই ছিল দার্শনিকদের প্রশ্ন সমূহ যেমনঃ আল্লাহ, মানুষ, মহাবিশ্ব ও শেষ পরিণতি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত ধ্যান-ধারণাসমূহকে ধ্বংস করা।

ফ্রয়েডের এক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল এভাবে যে, সে মানুষকে কতিপয় যৌন সম্পর্কের সমষ্টিতে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে, আর চারিত্রিক ব্যাপারে মানুষের বিবেকের নির্দেশকে অস্বীকার করল। তিনি বলেনঃ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে মূল ইঞ্জিন বা গতিচালক হলো কামনাতৃপ্তি। এর ফলে সৎ চরিত্রের অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে যায়, এসব মৌলিক অবকাঠামো গুলো বিভিন্ন পশ্চাদপদতায় রূপ নেয়, এগুলোকে অবাস্তব ও অবৈজ্ঞানিক বলে আখ্যায়িত করা হয়।

মাইকেলঃ আমি মনে করি সব যুগের মানব সভ্যতার মাঝে কিছু যৌথ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, আর কিছু বৈশিষ্ট আছে যা এক সভ্যতা থেকে অন্য সভ্যতাকে আলাদা করে।এ বিষয়গুলো( ইলাহ/ আল্লাহ, মানুষ, বিশ্ব) সকল সভ্যতায় যৌথভাবে রয়েছে তবে এ সবের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সভ্যতার মাঝে ভিন্নতা ছিল। কোন কোন সভ্যতায় এগুলোর একটিকে অপর দুটির উপরে প্রাধান্য দেয়া হয় এবং প্রথমটার ভিত্তিতে অপর দুটিকে বিবেচনা করা হয়।

বর্তমান ইউরোপীয় সভ্যতায় এবং রেনেসাঁর যুগের পরে এ সভ্যতায় মহাবিশ্বের অর্থ ও ভাবধারা প্রধান্য পেয়েছে। যখন বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা ব্যাপকহারে বিস্তারলাভ করেছে, তখন আল্লহর মূল সৃষ্টিকে বাদ দিয়ে বাহ্যিক উপাদান সামনে নিয়ে আসা হলো। এতে করে মানুষের আত্মিক শক্তিকে হত্যা করা হলো, প্রকৃতপক্ষে ডারউইন হলো এসব চিন্তার অন্যতম জনক।

রাশেদঃ তোমার সাথে আমি একমত। তবে তোমার কথার সাথে আরো কিছু যোগ করতে চাচ্ছিঃ

প্রথমতঃ সে সময়ে পাশ্চাত্য সমাজে এ সব ধ্যান-ধারনার পরিবর্তনের মূল কারন হলো সে সময়ে আত্মিক ও বৈজ্ঞানিক সম্পর্কের শূন্যতা ও পরস্পর বিরোধীতা, এছাড়াও গির্যার পদস্থলন ও সৃষ্টি ও জীবনের ব্যাপারে তাদের ভ্রান্ত ধ্যান ধারনা ও এ সবের ব্যাপারে তারা যা বলে তা ই বিশ্বাস করতে হবে বলে বাড়াবাড়ি।

দ্বিতীয়তঃ প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস যে, পাশ্চাত্যের উন্নতির কারন হলো তাদের সে সব ধ্যান ধারনা ও বিশ্বাসের উপর নির্ভর করা, নবজাগরণের শুরুতে ও মধ্যযুগে ব্যাপকহারে যার প্রসার ঘটেছে।

তৃতীয়তঃ বিজ্ঞানের প্রকৃত বিপ্লবের পরে দার্শনিক ও চিন্তাবিদদের এসব ভ্রান্ত ধ্যান ধারণা একের পর এক ভেঙ্গে যেতে থাকে। এতদসত্বেওপাশ্চাত্যের ও প্রাচ্যের কিছু লোক এখনো এসব ধ্যান ধারণা দ্বারা প্রভাবিত ও এ সব ধ্যান ধারণা পোষন করে আছেন।

আর বিভিন্ন সভ্যতার মাঝে যৌথ ধ্যান ধারণার ব্যাপারে তুমি যে কথা বলেছ সে ব্যাপারে মানুষের আচরনের ক্ষেত্রে ফ্রয়েডের ব্যাখ্যা ও সাতশত বছর আগে একজন মুসলিম বিজ্ঞানীর লিখিত ব্যাখ্যার তুলনার কথা মনে পড়ে।

মাইকেলঃ খুবই মজার ব্যাপার, ফ্রয়েডের ব্যাখ্যা ও সে যুগের মুসলিম আলেমের ব্যাখ্যার মাঝে সাদৃশ্য রয়েছে।

রাশেদঃ দু’জনের ধ্যানধারণার মাঝে সাদৃশ্য নয়, বরং আমরা বলতে পারি গঠনগত মিল। আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলেঃ তুমি কি ফ্রয়েডের মত অনুযায়ী মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রের গঠনপ্রণালী সম্পর্কে জান?

মাইকেলঃ ভাল করেই জানি, এর মূল কথা হলোঃ ফ্রয়েড মনে করেন যে, মানুষের মাঝে অনেকগুলো জৈব ডিভাইস বা যন্ত্র রয়েছে যা তার জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করে, যেমনঃ পরিপাকতন্ত্র ও সংবহনতন্ত্র....এমনিভাবে মানুষের রয়েছে মনস্তাত্বিক তন্ত্র যা তার অন্যান্য অংশের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে।

এ যন্ত্র যেসব দ্বারা গঠিত তা হলো তার কথায়ঃ (খামখেয়ালী) ,(আমিই মহান)্(আমি)

(খামখেয়ালী) হলো সহজাতপ্রবৃত্তি , বিশেষ চাহিদা, পুর্ব অভিজ্ঞতা,অনুভূতি অঞ্চলে পৌছার জন্য সবসময়ে চলতে থাকা আদি প্রবণতা যা দ্বারা সে তার কামনাতৃপ্তিমোতাবেক চাহিদা পূরণ করে। (খামখেয়ালী)কে সবচেয়ে পূরাতন মনস্তাত্বিক তন্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এগুলো মানব সন্তান জন্মের সময়ই গঠিত হয়, তাই এটাকে বংশগত প্রভাব হিসেবে ধরা হয়।

(আমিই মহান) হলোঃ কতিপয় সামাজিক মূল্যবোধ, মৌলনীতি ও উচ্চতর গুনাবলী, অর্থাৎ মানুষ অন্যের দ্বারা যেসব গুনাবলীতে প্রভাবিত হয়, এতে আরো যোগ করা যায় শিক্ষা ও চারিত্রিক মূল্যবোধের প্রভাব যা শিশুরা পিতামাতা, স্কুল ও সমাজ থেকে শিক্ষা পায়। পারিবারিক, জাতিগত, গোষ্ঠীগত, ধর্মীয় ঐতিহ্য- সংস্কার ইত্যাদির প্রভাব, এছাড়াও যারা সমাজের প্রত্যক্ষ্য প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের গঠিত প্রয়োজনীয় নিয়মনীতি। এছাড়াও বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের সাথে শিশুদের বেড়ে উঠার প্রভাবও (আমিই মহান) তন্ত্রে প্রভাব ফেলে। যেমন যদি কোন অভিভাবক সমাজের উন্নত আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করেন। (আমিই মহান) তন্ত্র সর্বদা যৌনক্ষুধা চরিতার্থকরণ বা প্রবৃত্তির কাজ ছেড়ে পূর্ণতার দিকে ধাবিত হবে, কেননা (আমিই মহান) বিবেকটি এদিকে নিয়ে যাবে, এটা উন্নত আদর্শের পথে চলবে ফলে সর্বদা কামনাতৃপ্তি বাদ দিয়ে পরিপূর্ণতার দিকে পৌঁছতে থাকবে, - ফ্রয়েডের মতে-।

আর (আমি) তন্ত্রকে এভাবে বর্ণনা করতে পারি যে,(খামখেয়ালী) ও (আমিই মহান) তন্ত্রের মাঝে এবং কামনাতৃপ্তির চাহিদা ও উন্নত আদর্শ ও মৌলিক মূলনীতি ও নিয়মকানুনের মাঝে বিদ্যমান বিরোধ বা একত্বতার ফলাফলই হলো (আমি) তন্ত্রের কাজ। অতএব (আমি) তন্ত্র হলো জাগ্রত অনুভূতি যা বাস্তবতা ও মানবিক চাহিদা ইত্যাদির মাঝে সমতা বজায় রেখে সমস্যা সমাধানের কাজ করে। পরিশেষে এটাই বহিরাগত আচার আচরনের মাপকাঠিতে মানুষের ব্যক্তিত্বের ফলাফলে প্রকাশ পায়।

অতএব (আমিই মহান) তন্ত্র হলো সে ভিন্ন দিক যা (আমি) তন্ত্রের পর্যবেক্ষক ও সতর্ককারীর কাজ করে, সে (খামখেয়ালী) তন্ত্রের কামনা বাসনা ও চাহিদার ডাকে সাড়া না দিতে সতর্ক করে।

রাশেদঃ চমৎকার ব্যাখ্যা, মাইকেল, তুমি এমনভাবে ব্যাখ্যা দিলে যেন চায়ের কাপ মুখে নিয়ে ফ্রয়েড নিজেই এ কপিশপে বসে ব্যাখ্যা দিচ্ছে.....

কিন্তু আমি এ সুন্দর ব্যাখ্যাকে এভাবে পূর্ণ করতে চাই যে,ফ্রয়েডের ব্যাখ্যাকৃত মনস্তাত্বিক তন্ত্র (আমি) ও অন্যান্যগুলোর মাঝে বাস্তবায়ন অত্যন্ত কঠিন, যদিও অসম্ভব বলব না। এগুলো পরস্পর বিরোধপূর্ণ ও সামঞ্জস্যবিধান করা দুরূহ ব্যাপার। যেহেতু (আমি) তন্ত্রকে (খামখেয়ালী) তন্ত্রের চাহিদার ডাকে সাড়া দিতে হয়, যা মূলত যৌন চাহিদাকে বুঝায়, আবার একই সময় তাকে বহিরাগর পরিমন্ডলে (আমিই মহান) তন্ত্রের দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়, যা চারিত্রিক ও সামাজিক উন্নত চাহিদার দিকে ডাকে, এজন্যই দু’ইয়ের মাঝে সামঞ্জস্যবিধান করা খুবই কঠিন। এজন্য (আমি) তন্ত্র (খামখেয়ালি) তন্ত্রের সাথে সম্পর্ক রেখে তার ডাকে সাড়া দিতে গেলে (আমি মহান) তন্ত্রের সাথে তার বিরোধ দেখা দেয়। যখন (আমি) তন্ত্র (খামখেয়ালী) ,(আমি মহান) তন্ত্র ও বাস্তবতার মাঝে সামাঞ্জস্যতা আনতে সক্ষম হয় তখন ব্যক্তি সমতা বজায় রেখে জীবন যাপন করে, আর যখন (খাম খেয়ালী) বা (আমি মহান) তন্ত্র তার উপর জয়লাভ করে তখন ব্যক্তি বিভিন্ন অশান্তি ও গোলযোগে ভোগে, তখন (আমি) তন্ত্র তার পরস্পর বিরোধী চাহিদার মাঝে সামাঞ্জস্যতা আনতে ব্যর্থ হয়, ফলে সে মানসিক ব্যাধিতে ভোগে।

এখানে মারাত্মক ক্ষতির দিক হচ্ছে, আমরা যখন বলি মানুষের মানসিক সুস্থতার অর্থ হলোঃ (আমি) তন্ত্র (খামখেয়ালী) তন্ত্র তথা চাহিদা ও যৌন প্রবণতার সাথে, এবং (আমি মহান) তন্ত্র তথা মূল্যবোধ, মৌলিক নীতি ও উন্নত চরিত্রের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চলা। আর (খামখেয়ালী) তন্ত্রের ডাকে সাড়া না দিলে তাতে চাহিদাকে অবদমন করতে হয় আবার (খামখেয়ালী) তন্ত্রকে পরিবর্তন করাও আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়......তখন প্রয়োজনের খাতিরে (আমি মহান) তন্ত্রকে পরিবর্তন ও ভেঙ্গে দেয়া ব্যাতীত আমাদের সামনে আর কোন উপায় থাকেনা। এমতাবস্থায় ধর্ম ও উন্নত চরিত্রকে আমাদের জীবন হতে বের করে দিতে হয় আর এর পরিবর্তে মানুষের যৌনচাহিদামুখী চরিত্র গ্রহন করতে হয় যা তার (খামখেয়ালী) তন্ত্রকে বাস্তবায়ন করে। ধর্ম ও চরিত্রকে দূরে সরিয়ে দিয়ে পাশ্চাত্যে ঠিক এই ব্যাপারটিই ঘটেছে। কোনপ্রকার চারিত্রিক নীতিমালা ব্যাতীত যৌন সম্পর্ক আর লালসার লাগাম ছেড়ে দেয়া হয়েছে, এর উপর তাদের সভ্যতা গড়ে উঠেছে।ফলে পরিবার ধ্বংস হচ্ছে, বরং মানুষের মানবিকতা ধ্বংস হচ্ছে। এতে মানুষ আর চতুষ্পদ জন্তু -যে কোন আখলাকের বিধিমালায় আবদ্ধ নয়- এতদুভয়ের মাঝে আর কোন পার্থক্য থাকলনা। আস এবার আমরা ডারউইনের তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করি!!

মাইকেলঃ তার মানে তুমি বলতে চাও যে, এসব অবদমিত জৈবিক চাহিদা পূরনে মানুষ যখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপায় খুঁজতে থাকে, তখন তা ফ্রয়েডের মতামত ও তার দর্শন তোমার ধারনা মতে্,এমন এক সভ্যতার দিকে নিয়ে যায় যা অবদমনের সভ্যতায় সৃষ্ট নীতিমালা ও মূল্যবোধের উপর প্রতিষ্ঠিত।

রাশেদঃ হ্যাঁ, পাশ্চাত্য সভ্যতা যখন নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে তখন তা সৃষ্টি করে প্রভুর পবিত্রতাকে বাদ দিয়ে। অন্যদিকে মুসলমানেরা মনে করেন যে, মানব সমাজে আখলাক চরিত্র হলো এমন জিনিস, অবশ্যই যার উৎস হতে হবে আসমানী শরিয়ত, বিবেক বা জ্ঞান নয়। কেননা বিবেক একা অবশ্যই গোমরা বা বক্র হয়ে যাবে, আর বিবেক যখন শরিয়তের ছত্রছায়ায় থাকবে তখন আখলাক উন্নত চরিত্রের ফলাফল দিবে।

মাইকেলঃ রাশেদ তুমি কিন্তু তোমাদের ধর্মের আলেম এ ব্যাপারে কি বলেছে তা এখনো বলনি। তিনি যা বলেছেন তা কি আমাদের এসব কথার সাথে মিল আছে নাকি অমিল?

রাশেদঃ তিনি যা বলেছেন ত হলো নৈতিক মূল্যবোধ ও ধ্যান ধারণার অংশ। এখানে তার কথা আলোচনা করতে গেলে অনেক লম্বা কথা বলতে হবে, আমার মনে হয় আমরা পরে এ ব্যাপারে আলোচনা করলে ভাল হয়।




Tags: