অনুগ্রহপূর্বক একটু খেয়াল কর!!

অনুগ্রহপূর্বক একটু খেয়াল কর!!

অনুগ্রহপূর্বক একটু খেয়াল কর!!

মাইকেলঃ দশ মিনিট পেরিয়ে গেল রাশেদকে এখনও দেখা যাচ্ছেনা.... আশ্চর্যের ব্যাপার!!

রাজিবঃ ঠিকই... এতে আমাদের অন্যান্য কাজ ও সময়ের মধ্যে প্রভাব ফেলবে।

একটু পরে রাশেদ সংলাপের রুমে প্রবেশ করল, বন্ধুদেরকে সালাম বিনিময় করে বলতে লাগলঃ

বিলম্ব হওয়ায় দুঃখিত। একটা কাজে আমাকে দেরি করে ফেলল, কাজটি বাদ দেয়া ঠিক মনে করিনি।

মাইকেলঃ রাশেদ আমাকে ক্ষমা করবা, ইহা আরব ও মুসলমানদের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য। তোমাদের কাছে সময়ের কোন গুরুত্ব নেই, যদিও আমার কথাটা একটু কষ্টদায়ক!

রাশেদঃ তুমি যা বলেছ তা অনেকটাই সঠিক। বাস্তবিকেই আমরা নিজেরাই নিজেদের সাথে খারাপ ব্যবহার করি আর অন্যকে আমাদের ব্যাপারে এ খারাপখারাপ ধারণা দেই...। কিন্তু এসব খারাপ আচরণকে ইসলামের সাথে সম্পর্কিত করার ব্যাপারে তোমার ভ্রান্তিকে আমি শুদ্ধ করে দিব।

মাইকেলঃতাহলে ইসলামের কারণে না হলে কি কারণে?কিন্তু আমি তো এমন আচরন বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তোমাদের দেশের লোকদের মাঝেই দেখছি।

রাশেদঃ এখানে আমাদের ও তোমাদের জাতির মধ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছেঃ সংস্কৃতি ও পরিবেশ। প্রকৃতপক্ষ্যে ইহা পরিবেশের কারনে হয়ে থাকে আর ইসলাম এ ধরণের আচরণের ব্যাপারে দায়ী নয়।

রাজিবঃ কিভাবে? তোমাদের সংস্কৃতিতে দ্বীন কি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেনা?

রাশেদঃ এটা সঠিক, তবে বর্তমানের মুসলমানেরা দ্বীনের শিক্ষা সঠিকভাবে পালন করেনা, এটা হয়ত দ্বীন না জানার কারনে বা দ্বীনের ব্যাপারে উদাসীনতার কারনে। যখন মানুষের উপর দ্বীনের প্রভাব ও বিশ্বাস কমে যায় তখন সে তার চারদিকের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়।

মাইকেলঃআমরা যে ব্যাপারে কথা বলতেছি সে ব্যাপারে পরিবেশের প্রভাবের কারন কি?

রাশেদঃ আমি তোমাকে স্পষ্ট করে বলছিঃ যেমন তোমরা আদিকাল থেকেই প্রচন্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় বাস করে আসতেছ, বেঁচে থাকার বিধিমালা তোমাদেরকে এ আবহাওয়ার সাথে খাপ খেয়ে থাকতে অত্যাবশ্যকীয় করেছে। ফলে তোমরা শীতকালীন সময়ের জন্য খাবার সংগ্রহ করে রাখ, ঠান্ডা মোকাবেলায় জ্বালানি সামগ্রী সংগ্রহ করে রাখ। এমনিভাবেই পরিবেশ তোমাদেরকে চিন্তাভাবনা ও নীতি নির্ধারন করা ছাড়াই সময়ের সুক্ষ্ম হিসেব অনুযায়ী আচরন করতে বাধ্য করছে।

আর আমাদের দেশ নাতিশীতোষ্ণ বা পরিমিত গরমের অঞ্চল, যেখানে বছরের প্রায় সময়ই আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকে। এমনিভাবে এখানে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ধন সম্পদ। ফলে জীবন যাপনের জন্য মানুষকে খুব কম পরিশ্রম করতে হয়। আর ইহাই বসবাসকারীদের আচার আচরণে প্রভাব ফেলে। ফলে তারা কোমলতার দিকে বেশি ঝুঁকে, অন্য কথায় বলতে পারঃ অলসতা ও শ্রমবিমুখতা –গরম আবহাওয়া তাদেরকে এরূপ হতে সাহায্য করে- জীবন ধারনের জন্য সময়ের সূক্ষ্ম হিসাবের প্রয়োজন অনুভব করেনা।

রাজিবঃ সন্দেহাতীত ভাবেই বলা যায় মানুষের উপর পরিবেশের অনেক প্রভাব রয়েছে, এসব প্রভাবের মোকাবিলা করতে এর চেয়ে বেশি শক্তিশালী প্রভাব সৃষ্টিকারীর প্রয়োজন। তাহলে ইসলাম কেন পরিবেশের এসব খারাপ প্রভাব পরিবর্তন করেনি? এটাকে গুরুত্ব না দেয়ার কারনে নাকি এগুলো পরিবর্তন করতে ইসলামের সামর্থ নেই?

রাশেদঃ ইসলাম এগুলো পরিবর্তন করতে না পারার পিছনে অনেক গুলো কারন আছে যা এখানে আলোচনা করার জায়গা না। তবে সাধারনভাবে একথা বলা যায়, যে সমাজইসলামকে জীবন যাপনের মাপকাঠি হিসেবে নিয়েছে ইসলাম সে সমাজ সুসংগঠিত করতে সক্ষম। যেমনি ভাবে ইহা ইসলামের অনুসারীদেরকে যে কোন সময় সুসংগঠিত ও সুসজ্জিত করেছে। এ বিষয়ে অনেক আলোকিত উদাহরণ আছে।

মাইকেলঃ তুমি কি কিছু মডেল পেশ করতে পারবে?

রাশেদঃ অনেক মডেল আছে, তন্মধ্যেঃ

হযরত ইমারা ইবনে খুজাইমা ইবনে সাবেত (রাঃ) ঘটনা বর্ণনা করেন, তিনি বলেন আমি খলিফা উমর ইবনে খাত্তাব (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি আমার পিতা খুজাইমা কে জিজ্ঞেস করলেনঃ আপনি কেন জমিনে চাষাবাদ করেননা? আমার পিতা তাকে বললেনঃ আমি বৃদ্ধ মানুষ, হয়ত আগামীকাল মরে যাব। উমর (রাঃ) তাকে বললেনঃ আমি আপনাকে চাষাবাদ করতে কঠোরভাবে আদেশ দিতেছি। ইমারা (রাঃ) বললেনঃ আমি উমর (রাঃ) কে আমার পিতার সাথে নিজ হাতে রোপন করতে দেখেছি।

বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ আমি বেকার ব্যক্তিকে ঘৃণা করি, যে দুনিয়া ও আখেরাত কোনটারই কাজ করেনা।

হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবু হাতেম আল রাজি (রাঃ) –তার পিতার ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে- বলেনঃ “ আমার পিতা কখনো কখনো খেতেন আর আমি তাকে পড়ে শুনাইতাম, তিনি হাঁটতেন আর আমি তাকে পড়ে শুনাইতাম, আবার তিনি কখনো টয়লেটেযেতেন তখনো আমি তাকে পড়ে শুনাইতাম, ঘরে কোন কিছুর জন্য আসলে তখনো তাকে আমি পড়ে শুনাইতাম। “

রাজিবঃ কিন্তু ইসলামের কি শিক্ষায় কি দৃঢ়ভাবে সময়ের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যাতে এর অনুসারীরা যে কোন সময়ে সে নির্দেশনার অনুসরন করতে পারে?

রাশেদঃ হ্যাঁ, ইসলামে কোরআন ও হাদিসে সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে। কেউ কোরআন, ইসলামের নবীর জীবনী ও সাহাবা ও তাবেঈনদের জীবনী দেখলে বুঝতে পারবে যে, তারা সব সময় সময়ের গুরুত্বদানকারী ও নিয়মাবনুর্তী ছিলেন। এর উদাহরণ হল আল্লাহ তায়া’লা পবিত্র কোরআনে অনেকবার সময়ের শপথ করেছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ “শপথ ফজরের, শপথ দশ রাত্রির, শপথ তার” (সুরা ফজরঃ ১-২) আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ “শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে” (সুরা আল লাইলঃ ১)।

আল্লাহ তায়া’লা আরো বলেনঃ “কসম যুগের (সময়ের)” (সুরা আসরঃ ১)।

তিনি ইঙ্গিত করেছেন যে, চন্দ্র সূর্য সৃষ্টি তার নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম যাতে মানুষ বছর ও সময়ের গণনা ও হিসেব করতে পারে।

ইসলামের অধিকাংশ ইবাদতে সময়ের গুরুত্ব বাস্তবায়ন করা হয়েছে, কেননা ইসলামের সব ইবাদতই সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। শুরু ও শেষ হিসেবে। বরং ইবাদত সহি ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য সময়কে নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে। এজন্যই ইসলামী শরিয়ত এ ব্যাপারে অনেক গুরুত্ব দিয়েছে। ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য সময়ানুবর্তীতাকে শর্ত করে দিয়ে সময়ের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ “নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে”।(সুরা নিসাঃ ১০৩) ।

নামাজ যা দ্বীনের খুঁটি, রাত দিনকে বিভিন্ন অংশে ভাগ করে এর ওয়াক্ত নির্ধারিত সময় ও নির্দিষ্ট আলামতে করা হয়েছে। এমনিভাবে ইসলামের অন্যান্য রুকুনগুলোঃ রোজার রয়েছে বাৎসরিক নির্ধারিত সময়। এ সময় মুসলমান নির্দিষ্ট সময়ের অনুসরন করে। এমনিভাবে যাকাত, যা আর্থ-সামাজিক পদ্ধতি, যা সময়ের সূক্ষ্মতা ও নির্ধারিত সময়ের সাথে সম্পৃক্ত। হজ্জের ব্যাপারেও একই কথা।

কোরআন যেমনিভাবে গুরুত্ব দিয়েছে তেমনিভাবে সময়ের গুরুত্বের ব্যাপারে রাসুলের (সাঃ) সুন্নতেও অনেক উদাহরণ রয়েছে, । কারো সাথে সময়ের অঙ্গিকারের ব্যাপারে রাসুল (সাঃ) খুব গুরুত্ব দিয়েছেন। ইহা রাসুলের (সাঃ) এ হাদিসের অন্তর্ভূক্তঃ “মুসলমানগন তাদের শর্তের উপর অটল থাকবে” । তাই কারো সাথে দেখা করার সময় নির্ধারন করা মানে প্রত্যেক লোক নিজের জন্য নির্ধারিত সময় মানার শর্ত করে নেয়া। যদি সে উক্ত শর্ত ভঙ্গ করে তবে সে নিজের জন্য যা শর্ত করেছে তাই ভঙ্গ করল। আর ওয়াদা ভঙ্গ করাকে রাসুল (সাঃ) মুনাফিকের আলামতের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করেছেন। তিনি বলেছেনঃ মুনাফিকের আলামত তিনটিঃ কথা বললে মিথ্যা বলে, ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে আর তার কাছে আমানত রাখলে তার খিয়ানত করে”। অতএব অযথা বিলম্বকারী ও এপয়েন্টমেন্ট ভঙ্গকারী ওয়াদা ভঙ্গকারী হিসেবে গন্য হবে। ।

মাইকেলঃ তবে সব সংস্কৃতি ও সভ্যতায় সময়ের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, ইসলাম এ ব্যাপারে বাড়তি কি গুরুত্ব যোগ করেছে?

রাশেদঃ ইসলাম সময়ের সদ্ব্যাবহার ও শৃঙ্খলা করতে তিনটি প্রধান মাত্রা সংযোগ করেছে।

প্রথমতঃ মেয়াদ, যা মানুষের সব জিনিসের মধ্যে সময় সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ, ইহা তার জীবন। সে একে আগ-পর করতে বাবাড়াতে পারেনা। সময় চলে গেলে আর ফিরে আসেনা। এজন্যই ইসলাম সময়কে জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত সঠিকভাবে কাজে লাগাতে বলেছে। বরং একে এ জীবনের পরের জীবনের সাথে বেঁধে দিয়েছে। পুনরুত্থান, কিয়ামতের দিনে হিসেব নিকাশ ইত্যাদির সাথে সময়কে সম্পৃক্ত করে দিয়েছে। এমনিভাবে ইসলাম মুসলমানকে খুব কঠিন মূহুর্তেও সময়কে কাজে লাগাতে উৎসাহিত করেছে। যেমন রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ যদি কিয়ামত সংঘটিত হচ্ছে এমন সময় তোমাদের কারো হাতে চারা থাকে, তবে সে যদি সক্ষম হয় তখনও যেন উক্ত চারা যেন বপন করে দেয়”।

দ্বিতীয় মাত্রা হলোঃ অত্যাবশ্যকীয় করাঃ ইসলাম সময়ের সুষ্ঠ বিনিয়োগ ও শৃঙ্গখলাকে শুধু গুরুত্বই দেয়নি বরং একে মুসলমানের ইচ্ছা অনুযায়ী না রেখে অত্যাবশ্যকীয় করে দিয়েছে। কেননা মানুষের জীবন হল সময়ের সমষ্টি মাত্র, যা শুধু তার মালিকানা নয়, বরং ইহা তার রবের পক্ষ থেকে তার সন্তুষ্ট কর্মে ব্যয়ের জন্য দান করা হয়েছে। এভাবেই ইসলাম সময়কে মানুষের জন্য মূলধন হিসেবে দিয়েছে। তার মূলধন কিভাবে বিনিয়োগ ও ব্যয় করে সে হিসেব নেয়া হবে। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন বান্দা চারটি জিনিসের হিসেব না দিয়ে এক পা ও নড়তে পারবেনাঃ তার জীবন সম্পর্কে তা কিভাবে ব্যয় করেছে....”। রাসুল (সাঃ) আরো বলেছেনঃ “দুটি নেয়ামতের ব্যাপারে অনেক মানুষই উদাসিন থাকেঃ সুস্বাস্থ্য ও সময়”। তিনি আরো বলছেনঃ “ পাঁচটি জিনিস চলে যাওয়ার আগেই সুযোগ গ্রহণ করঃ মৃত্যুর পূর্বে তোমার জীবন, রোগের আগে সুস্বাস্থ্য, ব্যস্ততার আগে অবসর সময়, বৃদ্ধ হওয়ার আগে যৌবন বয়স ও দারিদ্রতার আগে সচ্ছলতা – কে কাজে লাগাও-“। নিঃসন্দেহে বলা যায়, যার মূলধন বেশি হবে তাকে বেশি হিসেব দিতে হবে, (অর্থাৎ যার বয়স বেশি হবে তাকে বেশি হিসেব দিতে হবে)। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ “আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি,যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল”। (সুরা ফাতিরঃ ৩৭)।

রাসুল (সা:) বলেছেনঃ “আল্লাহ তায়া’লা যাকে দীর্ঘায়ু করেছেন, এমনকি তাকে ষাট বছরে পৌঁছিয়েছেন তার ওজর পেশ করার সুযোগ রাখেননি”।

হযরত হাসান বছরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেনঃ “হে আদম সন্তান! তুমি কতিপয় দিনের সমষ্টিমাত্র। যখনই তোমার থেকে একদিন চলে যাবে তখনই তোমার কিছু অংশ চলে যাবে”। এ (কিছু অংশ) আবার ঘণ্টা, মিনিট ও সেকেন্ডে বিভক্ত। যখনই এক মিনিট বা এক সেকেন্ড চলে যাবে তখনই কিছু অংশ চলে যাবে। অতএব সময়ই জীবন।

তৃতীয় মাত্রাটি হলঃ এ মহামূল্যবান বস্তুর প্রতি প্রেরণা ও এর প্রতিদান। সময় হল বাহ্যিক পরিবর্তনশীল বস্তু , কেউ এর উপর বলপ্রয়োগ বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা, এজন্যই ইসলাম মুসলমানের মধ্যে অভ্যন্তরীণ প্রেরণা দিয়ে দিয়েছে যা তাকে সেসব প্রেরণা ও উৎসাহে শীর্ষে নিয়ে যায়। আর এখানেই আসে বিবেকের রক্ষণাবেক্ষণের ভূমিকা, যেহেতু তা কোন কিছু গ্রহণ ও বর্জনের ক্ষেত্রে মূল পরিচালিকা শক্তি। ইসলামে ব্যক্তির বিবেকের নিয়ন্ত্রণ মানে স্রষ্টার কাছে হিসেব দেয়ার ভয় ও ভাল কাজে সাওয়াব পাওয়ার আশা । আর ইহাই মুসলমানকে ব্যক্তি ও জাতির কল্যানে সময় ব্যয় করতে আহবান করে।

মাইকেলঃ এ ধর্ম খুবই অদ্ভূত!... মানব জীবনের সব ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে। মানুষের জন্য কোন বিকল্প পথই রাখেনি, এমনকি তার ব্যক্তি জীবনেও।

রাশেদঃ আসলে ব্যাপারটা এ রকম নয়। ইসলাম মানুষের জন্য বৈচিত্র্যময় ও একাধিক পথ খুলে রেখেছে, সে তার ইচ্ছানুযায়ী কোন একটিকে গ্রহণ করতে পারে। তবে এ জীবন বিধান ছাড়া অন্য কোন জীবন বিধান গ্রহণ করার পথ খুলে রাখেনি। ইহা ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গিতে মানুষ, মহাবিশ্ব ও জীবন -যা ইতিপূর্বে আলোচনা করেছি- তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইসলাম সময়কে শুধু বস্তুগত বিনিয়োগের দৃষ্টিকোণ অর্থাৎ দুনিয়াবী কার্যপরিচালনা ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণে দেখেনা, বরং এর দৃষ্টিভঙ্গি অনেক উঁচু ও মহৎ। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ দুনিয়াবী বা বস্তুগত ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী হওয়ার আগে সে একজন অনুগত মুসলমান,যে আল্লাহর শাস্তিকে ভয় করে ও তাঁর কাছে উত্তম প্রতিদান কামনা করে, তার প্রত্যেক কথা ও কাজে তাঁর পর্যবেক্ষণ অনুভব করে। সুতরাং ইসলামে সময়ের বিনিয়োগ ও সুবিন্যাস শুধু একটি ভাবনা নয় যাতে শুধু অধিক মুনাফা ও উৎপাদন হয় বরং ইহা আরো উঁচুভাবনার বিষয়; যেহেতু সময়ই হল আত্মিক লক্ষ্যবস্তু যা হিসাব-নিকাশ ও শাস্তির দিন তথা কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা প্রতি লক্ষ্য করে চলে।

রাজিবঃ মুসলমানের চরিত্র সম্পর্কে আমার আরো কিছু কথা আছে। তবে পরবর্তী সাক্ষাতে তা আলোচনা করা ভাল মনে করি। আবার দেখা হবে।




Tags: