রাসূলগণের ইতিহাসঃ ভূমিকা

রাসূলগণের ইতিহাসঃ ভূমিকা

রাসূলগণের ইতিহাসঃ ভূমিকা

নবী রাসূলদের উপর ঈমান

$Bashir_Shaad.jpg*

বশির চাঁদ

ভারতীয় ধর্মপ্রচারক
আমরা তাদের কারো মাঝে কোন পার্থক্য করিনা
আল কোরআনই এক মাত্র গ্রন্থ যা অন্য সব আসমানী কিতাবের স্বীকৃতি দেয়। পক্ষান্তরে দেখতে পাই অন্য সব গ্রন্থ একে অপরকে অস্বীকার করে।

মানুষ প্রথমে হেদাতেতের উপরই ছিল, অতপর তারা পরস্পরে বিরোধ করে, ফলে তাদেরকে শিক্ষাদীক্ষা ও আখেরাতের ভয় প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তায়া’লা নবী রাসুল প্রেরণ করেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত। (জুম’আঃ ২)

কিন্তু লোকজন রাসুলদের দাওয়াতে দু’ভাগ হয়ে যায়, একদল রাসুলদেরকে বিশ্বাস করেন, তাদের উপর ঈমান আনেন, অন্যদল তাদেরকে মিথ্যারোপ করেন, তাদের প্রেরিত বিষয়ে অস্বীকার করেন। তারা সীমালঙ্ঘন করে নবী রাসুলদেরকে মিথ্যারোপ করেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ সকল মানুষ একই জাতি সত্তার অন্তর্ভুক্ত ছিল। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা পয়গম্বর পাঠালেন সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকরী হিসাবে। আর তাঁদের সাথে অবর্তীণ করলেন সত্য কিতাব, যাতে মানুষের মাঝে বিতর্কমূলক বিষয়ে মীমাংসা করতে পারেন। বস্তুতঃ কিতাবের ব্যাপারে অন্য কেউ মতভেদ করেনি; কিন্তু পরিষ্কার নির্দেশ এসে যাবার পর নিজেদের পারস্পরিক জেদবশতঃ তারাই করেছে, যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ ঈমানদারদেরকে হেদায়েত করেছেন সেই সত্য বিষয়ে, যে ব্যাপারে তারা মতভেদ লিপ্ত হয়েছিল। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা, সরল পথ বাতলে দেন। (বাকারাঃ ২১৩)

তারা অহংকারবশত ও নফসের কুপ্রবৃত্তির অনুসারে তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে ভাল লাগেনি, তখনই তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ। (বাকারাঃ ৮৭)

অথচ আল্লাহ তায়া’লা তাদের সকলের উপর ঈমান আনতে নির্দেশ দিয়েছেন, আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী। (বাকারাঃ ১৩৬)

তিনি অঙ্গিকার করেছেন, যারাই রাসুলদের উপর ঈমান আনবে তারাই দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি ও সফলতা পাবে। আর যারা তাদেরকে অস্বীকার করবে, তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে তারাই দুনিয়া ও আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্থ ও দুর্ভাগা হবে। যারা ঈমান এনেছে তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আর যারা আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, তারাই আল্লাহর দল এবং তারাই বিজয়ী। (মায়েদাঃ ৫৬)

আল্লাহ তায়া’লা আরো বলেনঃ যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়। যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ এবং মনোরম প্রত্যাবর্তণস্থল। (রা’দঃ ২৮-২৯)

আর যারা কুফুরী করেছে তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তোমরা কাফেরদেরকে পৃথিবীতে পরাক্রমশালী মনে করো না। তাদের ঠিকানা অগ্নি। কতই না নিকৃষ্ট এই প্রত্যাবর্তনস্থল। (নূরঃ ৫৭)

নবী রাসূলদের শত্রু

প্রত্যেক নবীরই শত্রু ছিল। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবীর জন্যে শত্রু করেছি শয়তান, মানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরকে কারুকার্যখচিত কথাবার্তা শিক্ষা দেয়। যদি আপনার পালনকর্তা চাইতেন, তবে তারা এ কাজ করত না। (আন’আমঃ ১১২)

মিথ্যাবাদীরা নবীদেরকে অহহেলা, শত্রুতা, অবজ্ঞা, ব্যঙ্গ ও উপহাস করেছে, আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ ওদের কাছে এমন কোন রসূল আসেননি, যাদের সাথে ওরা ঠাট্টাবিদ্রূপ করতে থাকেনি। (হিজরঃ ১১)

আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যখনই তাদের কাছে কোন রসূল আগমন করেছেন, তখনই তারা তাঁর সাথে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে। (যুখরুফঃ ৭)

আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ নিশ্চয়ই আপনার পূর্ববর্তী পয়গম্বরগণের সাথেও উপহাস করা হয়েছে। অতঃপর যারা তাঁদের সাথে উপহাস করেছিল, তাদেরকে ঐ শাস্তি বেষ্টন করে নিল, যা নিয়ে তারা উপহাস করত। (আন’আমঃ ১০)

তারা নবীদেরকে দেশ থেকে ত্যাগ বা ধর্ম ত্যাগের হুমকি দিয়েছে, আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ কাফেররা পয়গম্বরগণকে বলেছিলঃ আমরা তোমাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে ফিরে আসবে। তখন তাদের কাছে তাদের পালনকর্তা ওহী প্রেরণ করলেন যে, আমি জালিমদেরকে অবশ্যই ধ্বংস করে দেব। (ইবরাহীমঃ ১৩)

এমনকি তাদের হুমকি হত্যা পর্যন্ত পৌঁছেছে, আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ প্রত্যেক সম্প্রদায় নিজ নিজ পয়গম্বরকে আক্রমণ করার ইচ্ছা করেছিল (সূরা আল-মু’মিনঃ ৫)

অর্থাৎ তাদেরকে হত্যার চেষ্টা করে, এমনকি কতিপয় আম্বিয়াকে হত্যাও করা হয়েছে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে ভাল লাগেনি, তখনই তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ। (বাকারাঃ ৮৭)

আল্লাহ তায়া’লা মিথ্যাবাদীদেরকে ধ্বংস করেছেন, তিনি নবীদের ধর্মকে বিজয়ী করেছেন, যেমন আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আল্লাহ লিখে দিয়েছেনঃ আমি এবং আমার রসূলগণ অবশ্যই বিজয়ী হব। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী। (মুজাদিলাঃ ২১)

আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আমার রাসূল ও বান্দাগণের ব্যাপারে আমার এই বাক্য সত্য হয়েছে যে, অবশ্যই তারা সাহায্য প্রাপ্ত হয়। (ছফফাতঃ ১৭১-১৭২)

তিনি নবী রাসুলদেরকে রক্ষা করেছেন, আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল এবং পরহেযগার ছিল, তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছি। (নামলঃ ৫৩)

আল্লাহ তায়া’লা আরো বলেনঃ যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল ও সাবধানে চলত, আমি তাদেরকে উদ্ধার করলাম। (ফুসসিলাতঃ ১৮)

$Wolf_Baron_Nazir.jpg*

উলফ পিয়ার ব্যারন

অস্ট্রিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
শেষ রেসালাত
মুহাম্মদ তো সেই রাসুল যিনি ইসলাম নিয়ে এসেছেন। এর মাধ্যমে তিনি হন মহা বার্তা বহনকারীদের ধারাবাহিকতার শেষ পর্ব।

প্রত্যেক নবী তার স্বীয় সম্প্রদায়ের নিকট একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এসেছেন, তাদের যা উপযোগী তা নিয়ে ও তাদেরকে পবিত্র করতে। যে ব্যক্তি কোন একজন রাসুলকে অস্বীকার করল সে যেন সব রাসুলকেই অস্বীকার করল, অতঃএব যে ঈসা (আঃ) এর উপর ঈমান আনলনা, সে মূলত মূছা (আঃ) এর উপরও ঈমান আনেনি, আর মুহাম্মদ (সাঃ) এসেছেন ঈসা ও মূছা (আঃ) এর শরিয়তকে রহিত করতে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। (মায়েদাঃ ৪৮)

আর যে ব্যক্তি মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর ঈমান আনলনা সে মূলত ঈসা (আঃ) এর উপরও ঈমান আনেনি।

খাতেমুন্নাবীয়্যীন ও মুরসালীন সব জাতি ও সবযুগের নবী হওয়া জরুরী, তিনি কোন সময় বা জাতির জন্য নির্দিষ্ট নয়, তা না হলে মানবজাতি অহীর মর্যাদা হারাবে, মুহাম্মদ (সাঃ) ছিলেন খাতেমুন্নাবীয়্যীন ও মুরসালীন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত। (আহযাবঃ ৪০)

মানব ইতিহাসই হলো নবী রাসুলদের ইতিহাস!

মানবজাতির সৃষ্টি

নবীদেরকে তাচ্ছিল্য করা
নূহ (আঃ) কৃষিকাজ করতেন। তিনি আঙ্গুরের চাষ করতেন। আঙ্গুর থেকে মাদক তৈরি করতেন, তিনি মদ খেতেন ও মাতাল হতেন। তাঁর ছোট ছেলে হাম তাঁকে ভৎসণা করত। একদা মাতাল হলে তিনি উলঙ্গ হয়ে যায়, তখন হামের অন্য দুই ভাই পিতার গায়ে চাদর দিয়ে দেন। যখন তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে তখন হাম যা করেছে তা জানতে পেলেন, তিনি হামের সন্তান কিন’আনকে লা’নাত দেন ও বদদোয়া করেন, তিনি বললেনঃ তাঁর বংশধরেরা দাস হবে। তিনি সাম ও ইয়াফেসকে দোয়া করেন। (দশম সিহাহ) এ ঘটনার ব্যাখ্যায় তালমূদ বাবেলীতে সিনহাদ্রীন অধ্যয়ের ৭০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, কিনান বা হাম নূহ (আঃ) কে খাসী করে তাঁর সাথে খারাপ কাজ করত। আল্লাহর নবীদের ব্যাপারে এ ধরণের জঘন্য কাজের অপবাদ দেয়া থেকে আমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাই।

আমরা আল্লাহ তায়া’লার মানব সৃষ্টির ইতিহাস থেকে শুরু করে আদম (আঃ) কে জান্নাত থেকে বের করে জমিনে পাঠানো পর্যন্ত আলোচনা করব। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি, তখন ফেরেশতাগণ বলল, তুমি কি পৃথিবীতে এমন কাউকে সৃষ্টি করবে যে দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে? অথচ আমরা নিয়ত তোমার গুণকীর্তন করছি এবং তোমার পবিত্র সত্তাকে স্মরণ করছি। তিনি বললেন, নিঃসন্দেহে আমি জানি, যা তোমরা জান না। আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক। তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা। তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম, তখন তিনি বললেন, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আসমান ও যমীনের যাবতীয় গোপন বিষয় সম্পর্কে খুব ভাল করেই অবগত রয়েছি? এবং সেসব বিষয়ও জানি যা তোমরা প্রকাশ কর, আর যা তোমরা গোপন কর! এবং যখন আমি হযরত আদম (আঃ)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলীস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল। এবং আমি আদমকে হুকুম করলাম যে, তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং ওখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তিসহ খেতে থাক, কিন্তু এ গাছের নিকটবর্তী হয়ো না। অন্যথায় তোমরা যালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বে। অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে তাদেরকে বের করে দিল এবং আমি বললাম, তোমরা নেমে যাও। তোমরা পরস্পর একে অপরের শক্র হবে এবং তোমাদেরকে সেখানে কিছুকাল অবস্থান করতে হবে ও লাভ সংগ্রহ করতে হবে। অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু। আমি হুকুম করলাম, তোমরা সবাই নীচে নেমে যাও। অতঃপর যদি তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না (কোন কারণে) তারা চিন্তাগ্রস্ত ও সন্তপ্ত হবে। আর যে লোক তা অস্বীকার করবে এবং আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার প্রয়াস পাবে, তারাই হবে জাহান্নামবাসী; অন্তকাল সেখানে থাকবে। (বাকারাঃ ৩০-৩৯)

অতঃপর মানুষ যখন পরস্পরে বিরোধ করতে শুরু করল, সত্য ও হেদায়েত থেকে দূরে সরে যেতে লাগল, তখনই আল্লাহ তায়া’লা ধারাবাহিকভাবে নবী রাসুলদেরকে তার শরিয়ত নিয়ে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নিধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি প্রত্যাদেশ করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। (শুরাঃ ১৩)

হযরত ইদ্রিস (আঃ) থেকে শুরু করে নুহ, ইব্রাহিম, ইসমাইল, মূছা , ঈসা ও মুহাম্মদ (সালাওয়াতুল্লাহি আলাহিম আজমাইন) পর্যন্ত আল্লাহর সব নবী রাসুলরা একের পর এক ধারাবাহিকভাবে এসেছেন।

আল্লাহ তায়া’লা তাদের কাহিনী আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন। এখানে কিছু কাহিনী উল্লেখ করব, কেননা তাদের কাহিনীগুলোতে জ্ঞানীদের জন্য অনেক উপদেশ রয়েছে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন এবং প্রত্যেক বস্তুর বিবরণ রহমত ও হেদায়েত। (ইউসুফঃ ১১১)




Tags: