চিরন্তন রিসালা কোনটি?

চিরন্তন রিসালা কোনটি?

চিরন্তন রিসালা কোনটি?

আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পন

$Thomas_Carlyle.jpg*

টমাস কার্লাইল

স্কটিশ লেখক ও ইতিহাসবিদ
আল্লাহর কোন শরিক নেই
এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি সত্য ,তিনি ব্যাতীত আর সব ভ্রান্ত। তিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং রিজিক দিচ্ছেন। ইসলাম হল, সব আল্লাহর কাছে সোপর্দ করা। তার অনুগত্য করা। তার কাছে প্রশান্তি খোঁজা। তার উপর ভরসা করা। পূর্ণ শক্তি হলো তার বিধানের উপর অবিচল থাকা, দুনিয়া ও আখেরাতে যাই হোক, আল্লাহর পক্ষ থেকে যে কোন বিপদ আসুক _ হোক তা মৃত্যু_ সব সানন্দে নিঃসংকোচে ও সন্তুষ্টির সাথে গ্রহণ করা, এ বিশ্বাস করা যে, এটাই কল্যাণ, তা ছাড়া আর কোন কল্যাণ নাই। আর বোকামী হল, মানুষ নিজের দুর্বল বুদ্ধিকে জগত ও চারপাশের মানদণ্ড নির্ধারণ করা। বরং তার উচিৎ এ বিশ্বাস করা যে, জগতের একটি ন্যাইয়ানুগ আইন আছে, যদিও তার বুঝে না আসুক এবং কল্যাণ হল জগতের মূল। আর সততা হলো অস্তিত্বের প্রাণ। তার উচিৎ স্থিরতা ও তাকওয়ার সাথে এ সবে ও বিশ্বাস করা ও এর অনুসরন করা।

প্রত্যেক ধর্মের নাম সে ধর্মের নির্ধারিত প্রতিষ্ঠাকারী, বা সে ধর্মের অনুসারীদের নাম থেকে নামকরণ করা হয়। যেমনঃ যারাদাশতের নামানুসারে তার ধর্মের নামকরণ করা হয়েছে যারাদাশতিয়া। গৌতম বুদ্ধের নামানুসারে বৌদ্ধ ধর্মের নামকরণ করা হয়েছে। ইহুদী ধর্ম যেহেতু ইয়াহুজা সম্প্রদায়ের মাঝে প্রতিষ্ঠা লাভ করে তাই তাদের ধর্মে ইহুদী ধর্ম বলা হয়। আর খৃস্টান ধর্ম যিশু খৃস্টের থেকে নেয়া হয়েছে। কিন্তু ইসলাম ধর্ম এ ধরণের কোন কিছু থেকে নেয়া হয়নি।

$Gustaf_Lubon.jpg*

গোস্তাভ লে ভোন

ফরাসি ইতিহাসবিদ
আরব ও অনারবের মাঝে কোন পার্থক্য নেই
মুসলিমরা যে যেই জাতিভুক্ত হোকনা কেন তারা একে অপরের দৃষ্টিতে কেউ কারো পর নয়। অধিকারের ক্ষেত্রে দারুল ইসলামে চীনা মুসলিম ও আরব মুসলিমের মাঝে কোন ভেদাভেদ নেই। এভাবে ইসলামী অধিকার ইউরোপীয় অধিকার থেকে মৌলিক ভাবে ভিন্ন।

তাই ইসলাম ধর্ম কোন নির্দীষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত হয়নি। বরং যারাই আল্লাহর অনুগত্য স্বীকার করবে, তাঁর আদেশ নিষেধ মান্য করবে, তাঁর একত্ববাদে মাথানত করবে, সে নিজেই আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী হবে। যে ব্যক্তি সর্বশেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামেরর অনুসরণ করবে, তিনি যে সত্য ধর্ম নিয়ে এসেছেন সে ধর্মের আনুগত্য করবে, তাঁর প্রতি ঈমান আনবে ও তাঁর অনুসরণ করবে সেই প্রকৃত মুসলিম। সে যে কালে বা স্থানেই হোক না কেন, যে রঙ বা জাতির হোক না কেন।

মহাবিশ্বের সব কিছুর ধর্ম

ইসলাম এমন এক ধর্ম যার উপর এ পৃথিবীর সকলেই চলে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তারা কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে। (সূরা আলে ইমরানঃ ৮৩)

নাজিমো রামুনী

ঘানার মিশনারি
এ দুয়ের মাঝে অনেক পার্থক্য
কোরানের দৃষ্টিতে তাওহীদ ও আমি এক জন খৃষ্টান হিসাবে তৃত্ববাদে বিশ্বাস এ দুয়ের মাঝে বিচারের ক্ষেত্রে আমি নিরুপায় ছিলাম। এর পর দেখত পেলাম যে দ্বিতীয়টি ইসলামের নীতি থেকে অনেক নীচে। ঠিক সেখান থেকে আমি খৃষ্ট ধর্ম থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছিলাম। তা এই ভিত্তিতে যে, যে কোন ধর্মের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি হল এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস। সুতরাং সঠিক ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে যদি আল্লাহর প্রতি আমার বিশ্বাস শুদ্ধ না হয় তাহলে এর অর্থ হল, অন্য সব কাজ কর্ম হবে অনর্থক ও বেফায়দা।

একথা সকলেরই অবগত যে, এ পৃথিবীর সব কিছুই একটা নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন, স্থায়ী রীতি নীতির উপর পরিচালিত। চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, আকাশ জমিন সব কিছুই একটা সাধারণ নিয়মের উপর পরিচালিত। নিয়মের বাইরে সামান্য পরিমান নড়াচড়া, বা এক চুল পরিমানও বের হওয়া সম্ভব নয়। এমনকি মানুষ যদি তার নিজের দিকে লক্ষ্য করে তবে সে বুঝতে পারবে যে, সে নিজেও আল্লাহর নির্ধারিত নিয়ম কানুনের কাছে পরিপূর্ণভাবে সমর্পিত। শ্বাস-প্রশ্বাস, খাদ্য-পানি, আলো বাসাত, উষ্ণতা সব কিছুই তার জীবনের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত একটা সুনির্দিষ্ট পরিমাপে পরিচালিত হচ্ছে। এ নির্ধারিত নিয়মে তার শরীরের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরিচালিত হয়। সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আল্লাহ তায়া’লার নির্ধারণ অনুযায়ী কাজ করে।

এ পূর্ণ পরিমাপ ও নির্ধারণ, যার কাছে পৃথিবীর সব কিছু আত্মসমর্পিত, আসমানের সবচেয়ে বড় নক্ষত্র হতে জমিনের সবচেয়ে ছোট বালুকণা পর্যন্ত কোন কিছুই যার আনুগত্য থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেনা। এ সব কিছুই এক মহান ক্ষমতাবান মালিক, আল্লাহ তায়া’লার কর্তৃক নির্ধারিত। আসমান জমিন ও এ দুয়ের মধ্যকার সব কিছুই যেহেতু তাঁর নির্ধারিত নিয়ম কানুনের দ্বারা পরিচালিত, এতে বুঝা যায় যে, ইসলামই হলো সারা পৃথিবীর সকলের জন্য মনোনীত ধর্ম । কেননা ইসলামের অর্থ হলো কোন ধরণের আপত্তি ব্যতীত আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ, তাঁর আদেশ মান্য করা ও নিষেধ থেকে দূরে থাকা। চন্দ্র-সূর্য, আসমান জমিন, বায়ু, পানি, আলো, অন্ধকার, উষ্ণতা, গাছ পালা ও পশুপাখি সব কিছুই আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ এবং আয়ত্ত্বাধীন করে দিয়েছেন তোমাদের, যা আছে নভোমন্ডলে ও যা আছে ভূমন্ডলে; তাঁর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সূরা জাসিয়াঃ ১৩)

বরং যে মানুষ তার প্রতিপালককে জানেনা, তাঁর অস্তিত্ব অস্বীকার করে, তাঁর নিদর্শনাবলী প্রত্যাখ্যাণ করে, বা তিনি ছাড়া অন্যের ইবাদত করে, তাঁর সাথে শিরক করে, সে নিজেও তাকে যে স্বভাব প্রকৃতির উপর সৃষ্টি করা হয়েছে সে স্বভাব প্রকৃতিতে মহান আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে।

মানুষের মাঝে দুটি বিষয় লক্ষণীয়ঃ

প্রথমটি হলোঃ স্বভাবজাত প্রকৃতি, যার উপর আল্লাহ তায়া’লা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তথা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ, নতিস্বীকার, তাঁর ইবাদতে করতে ভাললাগা, তাঁর নৈকট্য লাভ, সত্য, কল্যাণ ও সততা ইত্যাদি যা তিনি ভালবাসেন তা ভালবাসা, আর বাতিল, অকল্যাণ, জুলুম, অত্যাচার ইত্যাদি যা তিনি অপছন্দ করেন তা ঘৃণা করে। মানব স্বভাবের আরো দাবী হলো, সম্পদ, পরিবার, সন্তান প্রভৃতিতে ভালবাসা, খাওয়া দাওয়া, পানাহার, বিবাহতে আগ্রহ, আর এ সবের চাহিদা অনুযায়ী শরীরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিভিন্ন কার্যাদি সম্পাদন।

দ্বিতীয়টি হলোঃ মানুষের ইচ্ছা ও পছন্দ করার ক্ষমতা ও স্বাধীনতা। আল্লাহ তায়া’লা নবী রাসুল ও কিতাব নাযিল করেছেন যাতে মানুষ সত্য-মিথ্যা, হেদায়েত-ভ্রষ্টতা ও কল্যাণ-অকল্যাণের মাঝে পার্থক্য নিরূপণ করতে পারে। তিনি তাদেরকে আকল বা জ্ঞান বুদ্ধি দান করেছেন যাতে তারা সেচ্ছায় জেনে শুনে এ সব পছন্দ করতে পারে। সে যদি চায় কল্যাণের পথে চলবে তবে তার বিবেক তাকে সত্য ও হেদায়েতের পথে পরিচালিত করবে। আর যদি সে অকল্যাণের পথে চলতে চায় তবে তার বিবেক তাকে সে অকল্যাণ ও ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে। বলুনঃ সত্য তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত। অতএব, যার ইচ্ছা, বিশ্বাস স্থাপন করুক এবং যার ইচ্ছা অমান্য করুক। আমি জালেমদের জন্যে অগ্নি প্রস্তুত করে রেখেছি, যার বেষ্টনী তাদের কে পরিবেষ্টন করে থাকবে। যদি তারা পানীয় প্রার্থনা করে, তবে পুঁজের ন্যায় পানীয় দেয়া হবে যা তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে। কত নিকৃষ্ট পানীয় এবং খুবই মন্দ আশ্রয়। (সূরা কাহফঃ ২৯)

মানুষেকে যদি প্রথম দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করা হয় তবে দেখা যাবে যে, সে আত্মসমর্পণের দিকে সর্বদা ধাবিত, ইহা স্বভাবগতভাবেই পালনে বাধ্য, সে উহা থেকে আলাদা হতে পারেনা, তার অবস্থা অন্যান্য সৃষ্টির মতই।

আবার যদি তাকে দ্বিতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয় তবে দেখা যাবে যে, সে স্বাধীন, যা ইচ্ছা তাই নিজের জন্য পছন্দ করতে পারে। সে ইচ্ছা করলে মুসলমান হতে পারে, আবার চাইলে সে কাফেরও হতে পারে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আমি তাকে পথ দেখিয়ে দিয়েছি। এখন সে হয় কৃতজ্ঞ হয়, না হয় অকৃতজ্ঞ হয় । (সূরা দাহর, আয়াতঃ ৩)

এজন্যই মানুষকে দু’ভাগে বিভক্ত দেখা যায়ঃ একদল মানুষ তার স্রষ্টাকে জানে, তাঁকে প্রতিপালক, মালিক, ইলাহ হিসেবে বিশ্বাস করে, একমাত্র তাঁরই ইবাদত করে, তাদের স্বাধীন জীবনে তাঁর শরিয়তের অনুসরণ করে, যেমনিভাবে সে স্বভাবসুলভভাবেই রবের প্রতি আত্মসমর্পণকারী, সে ইহা থেকে ভেগে যেতে পারেনা, সে আল্লাহর নির্ধারিত নিয়মের অনুসারী। এ হলো পূর্ণ মুসলিম, যার ইসলাম পূর্ণতা লাভ করে, তার জ্ঞান সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, কেননা সে তার প্রতিপালক ও স্রষ্টাকে জানতে পেরেছে, যিনি তাদের কাছে নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন, তাদেরকে শিক্ষা দেয়া ও নেয়ার শক্তি দান করেছেন। তার জ্ঞান বুদ্ধি ও চিন্তাধারা সঠিক পথে পরিচালিত হয়েছে, কেননা সে তার চিন্তাকে কাজে লাগিয়েছে। অতঃপর সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এক আল্লাহ ব্যতীত কারো ইবাদত করবেনা, যে আল্লাহ পাক তাকে বুঝ ও চিন্তা শক্তি দান করে সম্মানিত করেছেন। তার জবান সত্য কথা বলেও সঠিক পথে চলে। কেননা সে এখন এক আল্লাহ ব্যতীত কাউকে স্বীকার করেনা, যিনি তাকে কথা বলার শক্তি দান করেছেন, তার জীবনে সত্য ছাড়া যেন কিছুই অবশিষ্ট নেই। কেননা সে এমন এক শরিয়তের অনুসারী যার প্রত্যেকটি কাজে রয়েছে কল্যাণ। তার ও সমস্ত সৃষ্টিকূলের মাঝে পরিচিতি ও সহমর্মিতায় সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। কেননা সে মহাপ্রজ্ঞাময় ও জ্ঞানী আল্লাহ তায়া’লা ছাড়া কারো ইবাদত করেনা, সমস্ত সৃষ্টিকূল যার আদেশ মান্য করে, তাঁর নির্ধারিত নিয়মে তারা পরিচালিত হয়, আর তিনি এ সব সৃষ্টিকূল মানুষের জন্য অধীনস্থ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যে ব্যক্তি সৎকর্মপরায়ণ হয়ে স্বীয় মুখমন্ডলকে আল্লাহ অভিমূখী করে, সে এক মজবুত হাতল ধারণ করে, সকল কর্মের পরিণাম আল্লাহর দিকে। (সূরা লোকমানঃ ২২)

সব নবী রাসূলগণের ধর্ম

ইসলাম এমন এক ধর্ম যা সমস্ত মানবজাতির জন্য তিনি নাযিল করেছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও। (সূরা হাজ্বঃ ৩৪)

ইহা সমস্ত নবী রাসুলগণের ধর্ম। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী। (সূরা বাকারাঃ ১৩৬)

আল্লাহর সব রাসুলগণ এ ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁরা তাদের ইসলাম ঘোষণা করেছেন। তাদের জাতিকে এ ধর্মের দিকে আহবান করেছেন। আল্লাহ তায়া’লা নুহ (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ আর তাদেরকে শুনিয়ে দাও নূহের অবস্থা যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমাদের মাঝে আমার অবস্থিতি এবং আল্লাহর আয়াতসমূহের মাধ্যমে নসীহত করা ভারী বলে মনে হয়ে থাকে, তবে আমি আল্লাহর উপর ভরসা করছি। এখন তোমরা সবাই মিলে নিজেরদের কর্ম সাব্যস্ত কর এবং এতে তোমাদের শরীকদেরকে সমবেত করে নাও, যাতে তোমাদের মাঝে নিজেদের কাজের ব্যাপারে কোন সন্দেহ-সংশয় না থাকে। অতঃপর আমার সম্পর্কে যা কিছু করার করে ফেল এবং আমাকে অব্যাহতি দিও না। তারপরও যদি বিমুখতা অবলম্বন কর, তবে আমি তোমাদের কাছে কোন রকম বিনিময় কামনা করি না। আমার বিনিময় হল আল্লাহর দায়িত্বে। আর আমার প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন আমি আনুগত্য অবলম্বন করি। (সূরা ইউনুসঃ ৭১-৭২)

আল্লাহ তায়া’লা ইবরাহীম (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ স্মরণ কর, যখন তাকে তার পালনকর্তা বললেনঃ অনুগত হও। সে বললঃ আমি বিশ্বপালকের অনুগত হলাম। (সূরা বাকারাঃ ১৩১)

বরং ইবরাহীম (আঃ) তার সন্তান সন্তুতিদেরকে এ ধর্মে অনুসরণের জন্য অসিয়াত করে গেছেন। আল্লাহ তায়া’লা এ সম্পর্কে বলেনঃ এরই ওছিয়ত করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান না হয়ে কখনও মৃত্যুবরণ করো না। তোমরা কি উপস্থিত ছিলে, যখন ইয়াকুবের মৃত্যু নিকটবর্তী হয়? যখন সে সন্তানদের বললঃ আমার পর তোমরা কার এবাদত করবে? তারা বললো, আমরা তোমার পিতৃ-পুরুষ ইব্রাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্যের এবাদত করব। তিনি একক উপাস্য। (সূরা বাকারাঃ ১৩২-১৩৩)

আল্লাহ তায়া’লা মূসা (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ আর মূসা বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা যদি আল্লাহর উপর ঈমান এনে থাক, তবে তারই উপর ভরসা কর যদি তোমরা ফরমাবরদার হয়ে থাক। (সূরা ইউনুসঃ ৮৪)

আল্লাহ তায়া’লা ঈসা (আঃ) সম্পর্কে বলেনঃ আর যখন আমি হাওয়ারীদের মনে জাগ্রত করলাম যে, আমার প্রতি এবং আমার রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তখন তারা বলতে লাগল, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে,আমরা অনুগত্যশীল। (সূরা মায়েদাঃ ১১১)

ইসলাম হলো মানব জাতির জন্য সর্বশেষ আসমানী রিসালাত যা আল্লাহ তায়া’লা তাঁর নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে সমস্ত মানবের জন্য প্রেরণ করেছেন। তিনি ইহাকে পরিপূর্ণ করেছেন ও তাঁর বান্দাহরা এ ধর্মে চললে তিনি রাজি খুশী হবেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। (সূরা মায়েদাঃ ৩)

এ আয়াতে আল্লাহ তায়া’লা বলেছেন যে, তিনি মানব জাতির জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত ও পছন্দ করেছেন। এর উপর চললে তিনি কখনো অসন্তুষ্ট হবেন না। আল্লাহ তায়া’লা আরো ঘোষণা করেছেন যে, ইহাই একমাত্র সঠিক ধর্ম, ইহা ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তিনি গ্রহণ করবেন না। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। (সূরা আলে ইমরানঃ ১৯)

আল্লাহ তায়া’লা আরো বলেনঃ যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত। (সূরা আলে ইমরানঃ ৮৫)

প্রথম আয়াতে আল্লাহ তায়া’লা তাগিদ দিয়ে বলেছেন যে, ইসলামই তার নিকট একমাত্র ধর্ম। আর দ্বিতীয় আয়াতে বলেছেন যে, ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তিনি গ্রহণ করবেন না। মৃত্যুর পরে একমাত্র মুসলমানরাই সুখী ও সফলকাম হবেন। যারা ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মের উপর মৃত্যুবরণ করেছে তারা পরকালে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তারা জাহান্নামে শাস্তি পাবে। এজন্যই সমস্ত নবী রাসুলগণ আল্লাহর জন্য তাদের আত্মসমর্পণ ঘোষণা করেছেন। যারা আত্মসমর্পণ করেনি তাদের থেকে তারা ছিন্নতা ঘোষণা করেছেন। ইহুদী ও খৃস্টানদের মধ্যে যারাই মুক্তি ও সুখ শান্তি চায় তারা যেন ইসলামে প্রবেশ করে। তারা যেন ইসলামের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ করে। তার অনুসরণের মাধ্যমেই তারা মূসা ও ঈসা (আঃ) এর প্রকৃত অনুসারী হবেন। কেননা মূসা, ঈসা, মুহাম্মদ ও অন্যান্য সকল নবী রাসুলগণ মুসলমান ছিলেন। তারা সকলেই ইসলামের দিকে ডেকেছেন। কেননা ইসলামই আল্লাহ তায়া’লার একমাত্র ধর্ম যা নিয়ে তিনি তাদেরকে প্রেরণ করেছেন। সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আগমনের পরে কিয়ামত পর্যন্ত কারো মুসলমান বলে দাবী করলে যথাযথ হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত না সে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ঈমান আনবে ও তাঁকে অনুসরণকরবে এবং তিনি যে কোরআন নিয়ে এসেছেন সে কোরআন অনুযায়ী আমল করবে। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “সে স্বত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদের জীবন, এ উম্মতের যে কেউ, ইহুদী হোক বা নাসারা হোক, সে মৃত্যুবরণ করল অথচ আমি যা নিয়ে প্রেরিত হয়েছি তাতে ঈমান আনলনা, তবে সে জাহান্নামী হবে”। (মুসলিম শরিফ)

পরিপূর্ণ রিসালাত

$Gustaf_Lubon.jpg*

গোস্তাভ লে ভোন

ফরাসি ইতিহাসবিদ
ইসলাম সরল সহজ
ইসলামের মহা সহজতা এসেছে নিরেট তাওহীদ থেকে। এই সহজতার মাঝেই নিহিত ইসলামের শক্তির রহস্য। অন্যান্য ধর্মে যে জটিলতা, স্ববিরোধিতা ও দূর্বোধ্যতা দেখি, ইসলাম ও তার বুঝ সে সব থেকে মুক্ত এবং সহজ। ইসলামে ইলাহ একজন এবং আল্লাহর সামনে সব মানুষ সমান এমন নীতির চেয়ে স্পষ্ট আর আর কোন নীতি নেই।

ইসলাম ধর্ম, যা আল্লাহ তায়া’লা নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সমস্ত মানুষের জন্য প্রেরণ করেছেন, ইহা আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তার একত্ববাদের ধর্ম। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তিনি চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তাঁকে ডাক তাঁর খাঁটি এবাদতের মাধ্যমে। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহর। বলুন, যখন আমার কাছে আমার পালনকর্তার পক্ষ থেকে স্পষ্ট প্রমাণাদি এসে গেছে, তখন আল্লাহ ব্যতীত তোমরা যার পূজা কর, তার এবাদত করতে আমাকে নিষেধ করা হয়েছে। আমাকে আদেশ করা হয়েছে বিশ্ব পালনকর্তার অনুগত থাকতে। (সূরা আল মু’মিন, আয়াতঃ ৬৫-৬৬)

ইহা এক আল্লাহর একনিষ্ঠ ইবাদতের ধর্ম। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ? তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের এবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে নিয়েছে। আল্লাহ এদের কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত অন্য কারও এবাদত করো না। (সূরা ইউসুফঃ ৩৯-৪০)

ইহা সুস্থ সঠিক বিবেকের ধর্ম, যা যদি প্রকৃত রূপ ও আসল গুনাবলীসহ কারো নিকট উপস্থাপন করা হয় তবে সে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করবে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না। (সূরা ইউসুফঃ ৪০)

ইহা স্পষ্ট দলিল, প্রমাণ ও অকাট্য ভিত্তির ধর্ম। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ বলুন, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর। (সূরা নমলঃ ৬৪)

ইহা আরাম, সুখ-শান্তি ও আত্মপ্রশান্তির ধর্ম। যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমাণদার, পুরুষ হোক কিংবা নারী আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব। (সূরা নাহলঃ ৯৭)

$IbraheemKhaleel.jpg*

ইব্রাহীম খলিল

মিশরীয় মিশনারি ধর্মযাজক
আল্লাহ ছাড়া কারো দাসত্ব নয়
ইসলামের তাওহীদের বিধান আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। তা ইসলামের সবচেয়ে উজ্জল বৈশিষ্ট। তাওহীদ আমাকে এক আল্লাহর বান্দায় পরিণত করে। আমি কোন মানুষের দাস নই। ইসলামে তাওহীদদ মানুষকে মুক্ত করে, তাকে কোন মানুষের অনুগত করে না। এটাই প্রকৃত স্বাধীনতা। এক আল্লাহ ছাড়া আর কারো দাসত্ব নয়।

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে দ্বীন ইসলাম নিয়ে আল্লাহ তায়া’লা প্রেরণ করেছেন তা উপকারী সমস্ত ভাল জিনিসকে হালাল করেছে, আর ক্ষতিকর নোংরা জিনিসকে হারাম করেছে। সব সৎকর্মকে আদেশ দিয়েছে ও অন্যায় কর্মকে নিষেধ করেছে। ইহা সহজ সরল, উদারতার ধর্ম, এতে কোন জটিলতা ও কষ্টকর কিছু নেই। মানুষ যা করতে সক্ষম নয় তা করতে বাধ্য করা হয়নি। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে। (সূরা আ’রাফঃ ১৫৭)

$Michael_Hart.jpg*

মাইকেল হার্ট

মার্কিন লেখক
দ্বীন দুনিয়া দুটো একত্রে
ধর্মীয় ও পার্থিব উভয় ক্ষেত্রে এমন নজীর বিহীন বিরল যুগপৎ প্রভাব তাকে পরিণত করেছে মানবেতিহাসের সর্বাধিক প্রভাব সৃষ্টিকারী মহানতম ব্যক্তিত্বে।

ইহা পরিপূর্ণ জীবন বিধান, যা কিয়ামত পর্যন্ত সর্বকালে, সব স্থানে প্রযোজ্য। মানুষ তাদের দ্বীন ও দুনিয়ায় যা কিছু প্রয়োজনবোধ করে তার সব কিছুই এ ধর্ম নিয়ে এসেছে।

ইহা শান্তি ও সুখের পথ। জ্ঞান বিজ্ঞান ও সভ্যতার পথ। ন্যায় পরায়নতা ও ইনসাফের পথ। সম্মান ও স্বাধীনতার পথ। সমস্ত কল্যাণ ও ভাল কাজের পথ। এ ধর্ম কতই না মহান, কতই না পরিপূর্ণ!! যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে, তার চাইতে উত্তম ধর্ম কার? আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করে, যিনি একনিষ্ঠ ছিলেন, তার চাইতে উত্তম ধর্ম কার? আল্লাহ ইব্রাহীমকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছেন। (সূরা নিসাঃ ১২৫)

$Goethe.jpg*

গ্যাটো

জার্মান সাহিত্যিক
কেন নয়?!
তাই যদি ইসলাম হয় তাহলে আমরা সবাই কি মুসলিম হব না!?

ইহা তোমার প্রতিপালকের আহবান, যিনি তোমার নিজের চেয়েও তোমার প্রতি বেশি দয়াবান, তিনি তোমাকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের হবার জন্য ডাকছেন। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ বলুনঃ ‘হে আহলে-কিতাবগণ! একটি বিষয়ের দিকে আস-যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান-যে, আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করব না, তাঁর সাথে কোন শরীক সাব্যস্ত করব না এবং একমাত্র আল্লাহকে ছাড়া কাউকে পালনকর্তা বানাব না। তারপর যদি তারা স্বীকার না করে, তাহলে বলে দাও যে, ‘সাক্ষী থাক আমরা তো অনুগত। (সূরা আলে ইমরানঃ ৬৪)

$b-w_nehru.jpg*

জওয়াহারলাল নেহেরু

ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
রিসালাতের প্রতি মুহাম্মদের দৃঢ়বিশ্বাস
এই যে সাধারণ লোকটি মানুষকে অনুগত্যের ডাক দিচ্ছে রাজা বাদশাদেরকে তারা তার দূতের চিঠি হতে নিয়ে মনে হয় হতভম্ব হয়েছিল। কিন্তু এই চিঠি প্রেরণ আমাদের সামনে একটি পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরে নিজের প্রতি ও রিসালাতের প্রতি মুহাম্মদের বিশ্বাস সম্পর্কে। এই আস্থা ও বিশ্বাসের মাধ্যমে মুহাম্মদ (সঃ) তার অনুসারীদের মাঝে শক্তি, মর্যাদাবোধ ও রক্ষনশীলতা জাগিয়ে তুলতে পেরেছিলেন। তাদেরকে তিনি মরুবাসী থেকে সে সময়ের অর্ধ জাহানের নেতায় পরিণত করেছিলেন। মুহাম্মদ (সঃ) তার ওফাতের অগেই বিচ্ছিন্ন আরব গোত্র সমূহকে শক্তিশালী মর্যাদাশীল একটি জাতীতে পরিণত করেছিলেন ।

যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে তাদের বিপরীতে আরেকদল মানুষ রয়েছে, যারা তাদের স্বভাব প্রকৃতির শুধুই অবাধ্য হয়, যে স্বভাবে আল্লাহ তায়া’লা তাকে ইসলামের উপর সৃষ্টি করেছেন। এ ধর্মের সত্যতায় অনেক নিদর্শন, মু’যিজা আসার পরেও সে ইহাকে অস্বীকার ও অবাধ্যতার পর্দায় আড়াল করে রাখে। ফলে সে নিজের জন্য আল্লাহ তায়া’লার তাওহীদের বিপরীতে শিরক পছন্দ করে। সত্যের আলো, দৃঢ় বিশ্বাস ও হেদায়েতের পরিবর্তে অন্ধকার, সন্দেহ, কুসংস্কার ও অজগুবী সব কল্পকাহিনী নিজের জন্য পছন্দ করে।

সে এক আল্লাহর বান্দাহ হওয়ার পরিবর্তে তার মতই মানুষ বিশপ ও পাদ্রীদের দাস হতে পছন্দ করে। এমনকি রাসুলদের দাস হতে চায়। ফলে তার প্রকৃত স্বভাব বিলুপ্ত হয়ে যায়, তার বিবেক শূন্য হয়ে যায়। তখন সে আল্লাহ তায়া’লা তাকে যে স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তা বাদ দিয়ে খামখেয়ালী ও সংশয়পূর্ণ জিনিসের আনুগত্য করে। সব সন্তানই ইসলামের উপর জন্মগ্রহণ করে। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ এটাই আল্লাহর প্রকৃতি, যার উপর তিনি মানব সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সরল ধর্ম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। (সূরা রূমঃ ৩০)

$Arnold_Toynbee.jpg*

আর্নল্ড টয়েনবী

ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ
মুহাম্মদের নবুয়াতের রিসালাত
মুহাম্মদ (সঃ) আরব সমাজে দুটি জিনিস রক্ষার্থে তার রেসালত প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে তার জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন। সে দুটি হল, ধর্মীয় চিন্তায় ওয়াহদানিয়াত (একত্ববাদ) এবং আইন, ও শাসন ব্যবস্থা। আর তা বাস্তবায়িত হয়েছিল ইসলামের সুব্যাপক সমাজ ব্যবস্থার সুবাদে,যা একত্ববাদ ও প্রশাসনিক ক্ষমতাকে যুগপৎভাবে সন্নিবেশিত করতে পেরেছিল । যার ফলে ইসলাম এমন প্রভাব ও প্রতাপ অর্জন করে যে, আরবকে মুর্খ জাতি থেকে সভ্য জাতীতে পরিণত করে।

এখন তুমি নিজেই এখন কাফিরদের চূড়ান্ত গোমরাহী ও স্পষ্ট ভ্রষ্টতার পরিমাপ আন্দাজ করতে পার। আল্লাহ তায়া’লা বলেনঃ তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে স্বীয় প্রতিনিধি করেছেন। অতএব যে কুফরী করবে তার কুফরী তার উপরই বর্তাবে। কাফেরদের কুফর কেবল তাদের পালনকর্তার ক্রোধই বৃদ্ধি করে এবং কাফেরদের কুফর কেবল তাদের ক্ষতিই বৃদ্ধি করে। (সূরা ফাতিরঃ ৩৯)

তাহলে এ রিসালাতের মূলনীতি, উৎস ও বৈশিষ্ট্য কি?




Tags: